প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশ ঘরোয়া ক্রিকেটের কোচিং করিয়ে আসছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিমের গুরু হিসেবে পরিচিত এই অভিজ্ঞ কোচ জাতীয় দলে তার দক্ষতার ছাপ রেখেছেন বহুবার। তবে, বেশ কিছু সময় ধরে সালাউদ্দিনকে জাতীয় দলে স্থায়ীভাবে যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চললেও, বিভিন্ন কারণে বোর্ডের সঙ্গে তার বোঝাপড়া হচ্ছিল না। অবশেষে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাকে সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। চুক্তি করা হয়েছে আগামী বছরের মার্চের ১৫ তারিখ পর্যন্ত, যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে জানা গেছে।
সালাউদ্দিনের অভিজ্ঞতা বিস্তৃত এবং প্রশংসিত। ঘরোয়া ক্রিকেটের নানা ক্লাব এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের সহকারী কোচের ভূমিকায় ছিলেন। এছাড়াও, জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে তিনি বিশেষজ্ঞ কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন। শুধু দেশের মধ্যেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও তার কোচিং দক্ষতা ছড়িয়ে পড়েছে— ২০১৪ সালে সিঙ্গাপুর জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দলটিকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের লিগ-৪ ডিভিশনে নিয়ে গিয়েছিলেন।
সালাউদ্দিনের কোচিং দক্ষতার মূল স্বাক্ষর দেখা গেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল), যেখানে তার অধীনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একাধিকবার শিরোপা জিতেছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও তার কোচিংয়ে বেশ কয়েকটি শিরোপা জয় সম্ভব হয়েছে। এ কারণেই ঘরোয়া ক্রিকেটে তার সফল ক্যারিয়ার জাতীয় দলে তার যোগ্যতা প্রমাণের পথ তৈরি করেছে।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, "আমি যখনই সভাপতি হিসেবে যোগদান করি, তখন থেকেই প্রতিজ্ঞা করেছি যে যোগ্য লোকদেরই জাতীয় দলের সঙ্গে রাখব। সালাউদ্দিনের বিস্তর অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান তাকেঙেই এই পদের জন্য আদর্শ করে তুলেছে। আমার বিশ্বাস, স্থানীয় কোচদের উন্নয়নে এটিই সঠিক সময়।"
নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর, সালাউদ্দিন এখন জাতীয় দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের পাশাপাশি নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাসসহ অন্যান্য উদীয়মান ক্রিকেটারদের উন্নয়নে নিবিড়ভাবে কাজ করবেন। বিসিবি মনে করে, তার অভিজ্ঞতা এবং গভীর জ্ঞান জাতীয় দলের জন্য একটি বড় সংযোজন হবে।
তার নিয়োগ নিয়ে বিসিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, "মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মতো সফল ও অভিজ্ঞ কোচকে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। তার অভিজ্ঞতা দলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"